"আপনি কোন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন?"
কারো জন্য এটা হতে পারে একদম সেকেলে টাইপের প্রশ্ন। আবার কারো কাছে এই প্রশ্নটা হতে পারে GUI (Graphical User Interface) vs Command Line, LAMP vs IIS বা আধুনিক UI (User Interface) vs আগেরদিনের Metaphor এর মধ্যে বিতর্কের আমন্ত্রণ, Windows 10 নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার আভাস... এরকম সম্ভাবনার লিস্ট বড় হতেই থাকবে। যাহোক, অধিকাংশের জন্যই এই প্রশ্নের উত্তরটি হবে "Windows" অথবা "Mac"।
কিন্তু যারা Windows চালিয়েছেন (যেকোনো ভার্শন) বেশ অনেকটা সময়, অনেক সময়ই তাদের হতাশ হতে হয়েছে বিভিন্ন কারণে। আপনি হয়ত কাজ করছেন আপন মনে, এমন সময় আপনাকে অগ্রাহ্য করেই Windows বলে উঠল (অটোমেটিক ডাউনলোডেড) আপডেটগুলো Apply করতে এবং পিসি Restart করতে। এতে করে কখনও কখনও ডাটা লসের সম্ভাবনা থাকে। আর আপডেট এপ্লাইং আর পিসি বার কয়েক রিস্টার্ট করে কাটাতে হয় অনেকটা সময়।
আর ম্যালওয়ার (ভাইরাস, ট্রোজান, ওয়ার্ম, স্পাইওয়্যার)? আপনাকে হাজার টাকা খরচ করে কিনতে হয় এন্টিভাইরাস, আবার বছর বছর টাকা দিয়ে লাইসেন্স রিনিউ করতে হয়। সবচেয়ে মাথাখারাপ করা ব্যাপারটি ঘটে তখনি, যখন ভাইরাসের জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে যেতে হয় আশেপাশের সার্ভিস সেন্টারে, যেখানেও খরচ হয় অনেক টাকা আর ডাটা লসের সম্ভাবনা তো অনেকাংশে থাকেই।
এসব করতে করতে আপনার আসল কাজ আর করা হয়ে উঠে না। যদিও Windows এর মত Apple এর macOS ব্যবহারকারীদের এতটা ঝামেলা পোহাতে হয় না, তবুও তাদের কিন্তু লাখখানেক টাকা দিয়ে Apple পিসিটি কিনতে হয়...
যাহোক, এখন যদি বলি, এই দুইয়ের বাইরে ঝুঁট-ঝামেলাবিহীন আরেকটা বিকল্প Operating System আছে, যা ডাউনলোড ও ইন্সটল করতে কোনো টাকা খরচ করতে হয় না, আপডেট করতে GB-র পরে GB আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগে না এবং এখনও পর্যন্ত ভাইরাসসহ অন্যান্য ম্যালওয়্যারের প্রতি যথেষ্ট প্রতিরোধক্ষম???
হ্যাঁ, আছে। আর সেটিই হচ্ছে Linux।
তাহলে লিনাক্স আসলে কি? এইটা কি কোনো যাদু নাকি? চলুন দেখে আসি...
লিনাক্স আসলে কি জিনিস?
Linux এর জন্ম প্রায় ১৯৯০ এর মাঝামাঝিতে, যখন Linus Torvalds নামের এক ব্যক্তিMinix file system রিড করার জন্য Disk driver বানাচ্ছিলেন। (Minix হচ্ছে UNIX এর মত অপারেটিং সিস্টেম যা ১৯৮৭ তে বের হয়।) তার এই প্রজেক্টই পরবর্তীতে Linux Kernel এর জন্ম দেয়।
Kernel হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেমের অতি প্রয়োজনীয় অংশ যা অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজনীয় সকল মৌলিক
সার্ভিস দিয়ে থাকে। এটি Hardware এবং Software এর মধ্যে সংযোগ সাধন করে থাকে। Linux Kernel কে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় Open Source Project বলা যেতে পারে।
খুব সহজভাবে চাইলে বলা যেতে পারে, "Linux হচ্ছে Windows এবং macOS এর বিনামূল্য বিকল্প।"
লিনাক্সে সবই করা যায়:
যাদের মনে এতক্ষণে Linux ব্যবহার করার আগ্রহ জেগেছে, চলুন দেখি লোকজন তাদের কম্পিউটার দিয়ে কি কাজ করেএবং Linux তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারবে কি না...
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কম্পিউটার চালানো মানে:
- Facebook, Twitter ইত্যাদি সোশাল মিডিয়ায় প্রবেশ করা...
- ইমেইল পড়া এবং পাঠানো...
- গান শোনা...
- Youtube বা Netflix দেখা...
- মাঝেমধ্যে কিছু টাইপিং করা... ইত্যাদি।
কয়েক বছর আগেও এসব কাজ করার জন্য আলাদা আলাদা এপ্লিকেশনের দরকার হত। এখন কিন্তু আর এমনটা দেখা যায় না।
বর্তমান আধুনিক যুগে কম্পিউটারের কাজগুলো হয়ে গেছে ইন্টারনেট ব্রাউজারভিত্তিক। Facebook, Google Docs, Netflix, Youtube, Outlook 365... এগুলো সবই চলে Chrome, Firefox, Safari অথবা Internet Explorer দিয়ে। অর্থাৎ, অধিকাংশ কাজই যখন ব্রাউজারে করা যাচ্ছে, তাহলে অপারেটিং সিস্টেম কোন বিষয়ই না। তাহলে এ বিষয়টি মাথায় নিয়ে যদি ভাবি, "এমন অপারেটিং সিস্টেমই কি ব্যবহার করা উচিত নয় কি যেখানে Windows এর মত হাবিজাবি পেঁচাল আর ঝামেলা পোহাতে হবে না? "
ঠিক এখানেই Linux সবার থেকে এগিয়ে। আর Linux ওপেন সোর্স হওয়ার কারণে লিনাক্স যে শুধু ফ্রি ব্যবহার করা যাবে তা-ই নয়। বরং, আপনি নিজেই একে সাজিয়ে গুছিয়ে (এখানে বহুত কাহিনী আছে অবশ্য...) নিজের ডিস্টো হিসেবে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবেন।
লিনাক্স সমর্থন করে কাস্টোমাইজেশন এবং শেয়ারিং:
সফটওয়্যারগুলো সাধারণত দুই ধাঁচের হয়:Proprietary ('সাধারণত' যেটা টাকা দিয়ে কিনতে হয় এবং সোর্সকোড দেখা যায় না) এবং Open Source (সাধারণভাবে, যেটা টাকা দিয়ে কিনতে হয় না এবং সোর্সকোড দেখা যায়)।
Proprietary Software (Application বা Operating System) এর সোর্স কোড বা প্রোগ্রামিং কোড আমজনতাকে দেখা বা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয় না। কিন্তু Open Source এর ক্ষেত্রে সবাই সোর্সকোড ব্যবহারের সুযোগ পায়। Linux Kernel-ও ওপেন সোর্স, এ কারণেই এর জন্য টাকা লাগে না এবং যে কেউ চাইলেই একে কাস্টোমাইজ করে নিজের ডিস্টো হিসেবে বিলি করতে পারে।
আর ডিস্ট্রো কি জিনিস তা নিয়ে নতুন Linux ব্যবহারকারীরা একটু খটকায় পড়েন। ডিস্ট্রো (Distro) মানে Distribution। আগেই বলা হয়েছে যে Linux হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেম চালানোর জন্য একটা কার্নেল।
এটাকে ব্যবহার করতে গেলে অনেকগুলো লেয়ার তৈরি করতে হয়। যেমন :
- Device Driver
- Shell
- Compiler
- Applications
- Commands
- Utilities
- Daemons
ডেভেলপারেরা এই লেয়ারগুলো তৈরি করে একেকটি অনন্য ডিস্টো তৈরি করে থাকেন। আর তখনই তাকে বলা হয় একটি ডিস্ট্রিবিউশন বা ডিস্ট্রো।
কতগুলো জনপ্রিয় Linux ডিস্ট্রো হচ্ছে:
- Ubuntu Linux
- Linux Mint
- Elementary OS
- openSUSE
- Fedora Linux
- Arch Linux
- Debian
- Manjaro
- CentOS
এ পর্যন্ত প্রায় ১০০০ এর মত Linux ডিস্টো তৈরি হয়েছে। জনপ্রিয় ডিস্ট্রোগুলোর তালিকা দেখতে DistroWatch থেকে ঘুরে আসুন।
নতুন ডেস্কটপ পরিবেশের সমাহার:
Linux ডিস্ট্রোগুলোর মধ্যে বড় পার্থক্যের অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে এদের ডেস্কটপ পরিবেশ (Desktop Environment)। অধিকাংশ ব্যবহারকারীই জানেন Windows এবং Mac এর ডেস্কটপ পরিবেশ দেখতে কেমন হয়।আপনারা জেনে অবাক হবেন যে Linux এর অনেক ডেস্কটপ পরিবেশই Windows এবং Mac এর সাথে
সাদৃশ্যপূর্ণ। আবার কতগুলো তো খুবই অনন্য। GNOME Desktop এর কথাই ধরা যাক। নিচের ছবিটি দেখুন। এপসগুলো কেমন Android OS এর মত সাজানো... ;-)
কিন্তু ডেস্কটপ বলতে আসলে কি বুঝায়? খুবই সাধারণ অর্থে, ডেস্কটপ বলতে বুঝায় (macOS এর ক্ষেত্রে) Apple Menu, Applications Menu, Menu Bar, Status Menu, Notification Center, ক্লিক করা যায় এমন কিছু আইকন, এবং কিছু Panel বা Dock ইত্যাদির সমন্বয়। এসবের সমন্বয়ের মাধ্যমেই ডেস্কটপ পরিবেশ
ব্যবহারকারীকে স্বস্তি দেয় এবং কাজকে করে তোলে অনেকটাই সহজ ও প্রাণবন্ত। প্রত্যেক ডেস্কটপ পরিবেশেই এই জিনিসগুলো থাকে, লিনাক্সও এর ব্যতিক্রম নয়।
পূর্বে উল্লেখ করা GNOME Desktop এও এগুলো থাকে। যেমন: GNOME Dash (যা হচ্ছে এপ্লিকেশন মেনু; Android OS এর মত!), Top Bar (Apple এর মেনুবারের মত), Notification Center এবং আরও কিছু কাস্টোমাইজযোগ্য Docks।
একটা ডেস্কটপ পরিবেশ ছাড়া পিসির স্ক্রিন পরিণত হয় আদিমযুগের কালো স্ক্রিনে সাদা লেখাওয়ালা Command Line (বা Command Promt) এর মত, যা আমরা কেউই ব্যবহার করতে চাই না... :-p
কিছু জনপ্রিয় Linux ডেস্কটপ পরিবেশ হচ্ছে:
- GNOME
- KDE
- Cinnamon
- Mate
- Xfce
Linux এর আরও অনেক ডেস্কটপ পরিবেশ আছে। উপরে উল্লেখিত ডেক্সটপ পরিবেশগুলো যে শুধু জনপ্রিয়ই তা নয়, এগুলো অনেক ব্যবহার উপযোগী এবং নির্ভরযোগ্য।
যখন আপনি ডেস্কটপ পরিবেশ বাছাই করবেন, আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বাছাই করবেন।
উদাহরণ হিসেবে KDE Desktop এর কথা বলা যায়। এটার ইন্টারফেস অনেকটাই Windows 7 এর সাথে মিলে যায়।
Cinnamon এবং Mate মোটামুটি একই, কিন্তু দেখতে একটু কম আধুনিক লাগে আর কি...! :-p
Xfce হচ্ছে খুবই হালকা পাতলা গড়নের ডেস্কটপ পরিবেশ, দেখতেও উইন্ডোজের কাছাকাছি (আমি বলবো উইন্ডোজের চেয়েও চরম!)। আপনার পিসিটি যদি পুরাতন হয়ে থাকে অর্থাৎ হার্ডওয়্যার রিসোর্স যদি কম থাকে, তবে এই ডেস্কটপ পরিবেশটি আপনার জন্য উপযোগী।
Linux এ কি সব ধরনের সফটওয়্যার আছে?
এই পয়েন্টে এসে পূর্বে অনেক মানুষই থমকে যেত। অনেকেই একটাকথা বলত, "Linux এ উইন্ডোজের সফটওয়্যার চলে না!"
কিন্তু এটা পুরোপুরি সত্যি নয়। বর্তমানে কম্পিটারে কাজ করার যাবতীয় সকল কাজের জন্যই Linux এর সফটওয়্যার রয়েছে। তাছাড়া, Wine নামক একটা সফটওয়্যার (মূলত একটা Compatibility Layer, কোনো Emulator না) আছে যা দিয়ে উইন্ডোজের অনেক সফটওয়্যারই চালানো যায়। যদিও Wine ব্যবহারের দরকার হয় না, কারণ লিনাক্সে সফটওয়্যারের কোনো অভাব নেই। তাছাড়া এসব সফটওয়্যার সবই পাবেন ফ্রি তে।
Linux এ ব্যবহৃত Windows এ চালিত কিছু সফটওয়্যারের বিকল্প:
- LibreOffice - অফিস সফটওয়্যার (MS Office এ বিকল্প)।
- Firefox / Chromium / Opera - ওয়েব ব্রাউজার (Internet Explorer বা Safari এর বিকল্প)।
- The GIMP - অত্যাধুনিক ফটো এডিটিং টুল (Photoshop এর মত)।
- Audacity - একটি সহজে ব্যবহারযোগ্য অডিও রেকর্ডিং টুল।
- Evolution - একটি Groupwork Suite (Outlook এর বিকল্প)।
- VLC / GNOME MPlayer / Parole Media Player - মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার (Windows Media Player সহ জনপ্রিয় সব মিডিয়া প্লেয়ারের বিকল্প)।
- Thunderbird - ইমেইল ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার (Outlook এর বিকল্প)।
Linux এর রয়েছে ১০,০০০ এরও অধিক সফটওয়্যার, যেগুলো বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য।
তাছাড়া প্রায় প্রত্যেকটি ডিস্ট্রিবিউশনের রয়েছে নিজস্ব App store (Ubuntu Software, GNOME Software বা Elementary OS AppCenter), যা থেকে যেকোনো সফটওয়্যার খুব সহজেই ডাউনলোড দেওয়া যায়, যেমন আমরা Android OS এ Google Play Store থেকে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে পারি।
Linux কি আমার জন্য? কিভাবে বুঝবো?
Linux এ রয়েছে ফ্রি, সুরক্ষিত ও সহজে ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যারের ছড়াছড়ি।তবুও এটি আপনি ব্যবহার না ও করতে পারেন। এটা সম্ভব যদি আপনি Wondows বা macOS এর
ডাই হার্ড ফ্যান হন! এছাড়াও যদি কম্পিউটার ব্যবহারে নতুন হয়ে থাকেন, তবেও
এমনটা হতে পারে।
মনে হতে পারে, "Windows এর সাথে Linux সেটাপ দিব, আবার ভালো না লাগলে আনইন্সটল
দিব - কি ঝামেলা রে বাবা!" কিন্তু বাস্তবে তা নয়। Linux এর জনপ্রিয় ও কম জনপ্রিয় সব ডিস্ট্রোই
Live Boot হিসেবে চালানো যায়। আপনি যে ডিস্ট্রোটি টেস্ট করতে চান, ঐ ডিস্ট্রোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে .iso ফাইল ডাউনলোড করে পেনড্রাইভ বা সিডি/ডিভিডি ডিস্কে Burn করে আপনি পেনড্রাইভ বা সিডি/ডিভিডি ডিস্ক থেকে Linux আপনার পিসিতে চালাতে পারবেন। এমনকি আপনার পিসির হার্ডডিস্কও যদি নষ্ট হয়ে থাকে বা হার্ডডিস্ক পিসিতে নাও লাগানো থাকে, তবুও আপনি Live Boot চালাতে পারবেন। কারণ, Live Boot চালানোর সময় হার্ডডিস্ক ব্যবহৃত হয় না, র্যা ম থেকে অপারেটিং সিস্টেম চালু হয়। তাই আপনি এভাবে Linux চালাতে পারবেন কোনো প্রকার ডাটা মিসিং বা ডিলিটের ভয় ছাড়াই। এভাবে চালাতে থাকুন Linux। এর পর যদি Linux ভালো লাগে, তাহলে ঐ পেনড্রাইভ বা সিডি/ডিভিডি ডিস্ক থেকেই ইন্সটল করতে পারবেন।
শুধু তাই নয়, আপনি পেনড্রাইভ বা সিডি/ডিভিডি ডিস্ক থেকে অন্যের পিসিতেও Linux চালাতে পারবেন। মজা না ব্যাপারটা!!!
সবশেষে, ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব, আপনি লিনাক্স চালালে নেট কানেকশন সাথে রাখবেন। ব্রডব্যান্ড না হোক, হাতের মোবাইলে নেট থাকা চাই। এতে আপনি ছোটখাট যেকোনো সমস্যায় পড়লে গুগল সার্চ করেই সমাধান পেতে পারেন। এজন্য কিছুটা ইংরেজি জানা ও গুগল সার্চিং এ দক্ষতা প্রয়োজন। তবে খুব বেশি ইংরেজি না জানলেও চলবে, অন্তত ইংরেজি পড়ে বুঝার ক্ষমতাটা থাকা জরুরি। কারণ, বাংলায় লিনাক্স সম্পর্কে আর্টিকেল ও ভিডিও খুব কমই পাবেন। আর যেটা সর্বদা থাকা প্রয়োজন (Windows, Linux, macOS বা Android যেটাই চালান না কেন) সেটা হল কমনসেন্স, ধৈর্য্য আর সমস্যা সমাধান করার মানসিকতা।
আপনার জন্য শুভকামনা...
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন