![]() |
VPN বা Virtual Private Network হচ্ছে এক প্রকার Private Network যা সাধারণ কাজে ব্যবহার করা হয় না। VPN শব্দটার সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। তবে শুধু নামের সাথেই পরিচিত, কিন্তু এটা যে কি কাজে ব্যবহ্যত হয় তা অধিকাংশ মানুষই জানেন না। আমাদের দেশে অবশ্য ফ্রি নেট চালানোর (অর্থাৎ সাধারণ কাজে) জন্য VPN ব্যবহার করা হয় বলে লোকে এটাকে খুবই সাধারণ জিনিস বলে মনে করে। VPN সাধারণত তারাই ব্যবহার করে থাকেন যাদের ইন্টারনেটে বিভিন্ন কাজ করার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজন। বর্তমান ইন্টারনেট ইউজারদের কাছে এটি কোনো নতুন জিনিস না। VPN সার্ভিস দেয় এমন অনেক প্রোভাইডার রয়েছে। এখান থেকে বিভিন্ন VPN Service Provider এর VPN Rating দেখতে পারেন।
VPN ব্যবহার করে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোটামুটি সব ওয়েবসাইটই এক্সেস করতে পারে, এমন কি ব্লক করা সাইটগুলোও। যাহোক, VPN সম্পর্কে আরও বিষয় জানার জন্য আমরা এখন VPN এর উপকারীতা, অপকারীতা এবং কার্যকারীতা আলোচনা করব।
তাহলে শুরু করছি...
VPN Function এবং এটি যেভাবে কাজ করে:
VPN এর উপকারীতা এবং অপকারীতা সম্পর্কে জানার আগে চলুন আমরা VPN এর কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে জানি। VPN এর রয়েছে এমন কার্যকারিতা যার ফলে ব্যবহারকারী নিরাপত্তার সাথে দূর থেকে তার নিজস্ব ডেস্কটপ, সার্ভার বা নেটওয়ার্ক এক্সেস করতে পারে। সোজা বাংলায় এর সংজ্ঞা দাঁড়ায়, VPN হল একটা কাল্পনিক ‘Tunnel’ যার মাধ্যমে নিরাপদে তথ্য আদান প্রদান করা যায়। এই ‘Tunnel’ বা সুড়ঙ্গের কিন্তু বাস্তবে কোন প্রকার অস্তিত্ব নেই, এটি দিয়ে মূলত কাল্পনিক একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বোঝানো হচ্ছে যেটি দিয়ে ইন্টারনেটে নিরাপদে তথ্য আদান প্রদান করা যায়। আমরা এখন ‘নিরাপদ’ শব্দটির উপর জোর দিব। ইন্টারনেট মূলত উন্মুক্ত তথ্য আদান প্রদানের জায়গা। যেহেতু এটি Public Network অর্থাৎ, পৃথিবীর সবাই এখানে সংযুক্ত, তাই এখানে সরাসরি তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাবার একটা বড় ঝুঁকি আছে। এই ঝুঁকি এড়ানোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত বা Private Network-এ সংযুক্ত হওয়ার নিরাপদ পদ্ধতিই হল VPN। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারী এবং প্রাইভেট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য ইন্টারনেটে একটি কাল্পনিক সুড়ঙ্গ তৈরী হয়। VPN বিভিন্ন Network Protocol নিয়ে গঠিত। এই Network Protocol এর উপর ভিত্তি করে VPN আবার কয়েক প্রকার। যেমন: IPSec, SOCKS, PPTD, L2TP ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রোতোকলের ব্যবহারই এর নিরাপত্তা বিধান করে। VPN নেটওয়ার্কগুলো সাধারণত Highly Encrypted হয়ে থাকে। এ কারণে এ নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে অন্যদের চোখের আড়ালে চলে যেতে পারে। তাদেরকে সহজে ট্রেস করা যায় না বা তাদের ব্রাউজার কুকিজ থেকে শুরু করে লোকেশন পর্যন্ত সবই গোপন থাকে। VPN ব্যবহার করার জন্য একটি (বা একাধিক) সার্ভারের প্রয়োজন হয় যা নেটওয়ার্কে অবস্থিত ডিভাইসগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধনের সৃষ্টি করে থাকে।VPN চালানোর জন্য সাধারণত ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট username ও password দেওয়া হয়ে থাকে। VPN সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য ব্যবহারকারীদেরকে নির্দিষ্ট VPN Client Application চালু করতে হয়। এই এপটি VPN সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করে username এবং password সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে। যদি username এবং password সঠিক হয়, তবে VPN সার্ভারটি ঐ ব্যবহারকারীর ডিভাইসের জন্য একটি IP Address দিবে, যা ব্যবহার করে ব্যবহারকারী VPN এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
এরপর ব্যবহারকারী সুরক্ষিতভাবে তার প্রয়োজনীয় ডাটা ট্রান্সফার করতে পারবে, দূরবর্তী ডেস্কটপ, সার্ভার বা নেটওয়ার্ক কন্ট্রোল করতে পারবে, বিভিন্ন ব্লক করা সাইটে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারবে।
তাহলে, VPN এর সুবিধা আর অসুবিধা কি?
VPN এর সুবিধা:
- VPN ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা যেকোনো জায়গা থেকে তাদের কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে।
- VPN ব্যবহার করে ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে সর্বোচ্চ সুরক্ষা পান, এমন কি সেটি ওয়াই-ফাই রাউটার ব্যবহার করেও হতে পারে।
- VPN এর মত স্পেশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা তুলনামূলক সল্পমূল্যের বিনিময়ে অধিক সুরক্ষা পেয়ে থাকেন।
- VPN সার্ভিস Public Network থেকে শুরু করে বাসার Wifi Network (Private Network)-এও ব্যবহার করে তথ্যের নিরাপত্তা বিধান করা যায়।
- এর দ্বারা বিভিন্ন Blocked Site গুলো এক্সেস করা। যেমন: যদি ইউটিউব বা ফেসবুক আমাদের দেশে বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলেও আপনি VPN ব্যবহার করে ইউটিউব ও ফেসবুকে ঢুকতে পারবেন। আমাদের দেশে কিছুকাল আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার বাস্তব উদাহরণও আমাদের অজানা নয়।
- এর মাধ্যমে নিজের ডিভাইসের আসল IP Address লুকিয়ে রাখা যায়। ফলে হ্যাকারদের কবলে পড়ার সম্ভাবনা নাই।
- VPN ব্যবহারের ফলে আপনার অবস্থান কেউ ট্র্যাক করতে পারবে না।
- VPN আপনার মেশিনকে একটি Virtual Network-এর সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে এবং আপনার পাঠানো সব ডাটা অত্যন্ত দ্রুততার সাথে encrypt করে ফেলে, অর্থাৎ Public Domain থেকে লুকিয়ে রাখে এবং এটা আপনার browsing history বা browser cookies এর কোনো ট্র্যাক রাখে না। কাজেই আপনি অনলাইনে পুরোপুরি নিরাপদ।
VPN এর অসুবিধা:
- VPN ব্যবহারের প্রধান অসুবিধা হচ্ছে এটি ব্যবহারকারীকে টরেন্ট ফাইল ডাউনলোডের সুবিধা দেয় না এবং এটি সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর।
- VPN সার্ভিস যারা দেন তাদেরকে সর্বদা সজাগ থাকতে হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় যেন তাদের এই সিস্টেম ব্যবহার করে যেন আইন বিরুদ্ধ কাজ যাতে সংঘটিত না হয়। এজন্য এসব সিস্টেম পরিচালনার জন্য কর্মস্থলে খুবই পারদর্শী লোকের প্রয়োজন হয়।
- অনেক সন্ত্রাসীরা তাদের অনলাইনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এবং হ্যাকাররা হ্যাকিং-এর ক্ষেত্রে VPN সার্ভিস ব্যবহার করে থাকে। ফলে তাদেরকে পাকড়াও করা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে।
- VPN সার্ভিস ফ্রি কিংবা প্রিমিয়াম হতে পারে। তবে অধিকাংশ VPN সার্ভিসের ক্ষেত্রেই টাকা গুণতে হয়।
তাহলে এই ছিল সংক্ষেপে VPN কি এবং এর সুবিধা ও অসুবিধা। আর কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচের কমেন্ট বক্স তো আছেই...
Search Queries:
ভিপিএন কি এবং কেন, Tips & Tricks, VPN কি এবং এর সুবিধা ও অসুবিধা .



VPN use করলে কি ফোনের কোনো ক্ষতি হতে পারে???
উত্তরমুছুননা। তবে ফোন লো কনফিগারেশনের হয়ে থাকলে এবং ভিপিএন ব্যবহারের ফলে মোবাইল তুলনামূলক স্লো কাজ করলে না ব্যবহার করাই ভালো। আর মোবাইলে সর্বদা ভিপিএন ব্যবহার না করাই উত্তম। কারণ এতে ব্যাটারি পারফর্মেন্স এবং ব্যাটারি লাইফের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
মুছুনপূর্বের উত্তরটি মুছে যাওয়ায় আবার লিখে দিলাম। :-(
মুছুনSuggest a best free VPN!
উত্তরমুছুনসিকিউরিটির কথা চিন্তা করলে ProtonVPN ইউজ করতে পারেন। আর স্পিড চাইলে নিজস্ব অর্থায়নে ভিপিএন বানাতে পারেন। মাসে কমপক্ষে ৫০০-৭০০ টাকা লাগবে।
মুছুনআর ফ্রিতে স্পিড বিবেচনা করলে প্লে স্টোরে থাকা অন্যান্য ভিপিএনগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন।