লিনাক্স নিয়ে ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের সব সময়ই ২টি কমন অভিযোগ থাকে এবং সেগুলো হল:
এরূপ হওয়ার কারণ
লিনাক্স কিন্তু উইন্ডোজের মত ব্যবহারকারীদের টাকা হাতায় না। লিনাক্স ডিস্ট্রোগুলো তৈরি হয় সাধারণ ও কমন হার্ডওয়্যার সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে। লিনাক্সের ড্রাইভারগুলোর ক্ষেত্রেও একই কাহিনী। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ উইন্ডোজ ব্যবহার করে বলে ল্যাপটপ প্রস্তুতকারকেরা প্রত্যেক ল্যাপটপের জন্য উইন্ডোজ উপযোগী ড্রাইভার সফটওয়্যার তৈরি করে। লিনাক্স তো আর সবাই ব্যবহার করে না, তাই অধিকাংশ ল্যাপটপের জন্য আলাদা করে লিনাক্স উপযোগী ড্রাইভার নেই। তারপরেও দেখা যায় কোন কোন ল্যাপটপে লিনাক্স ব্যাটারি ব্যাকআপ ও টেম্পারেচার অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে ভালো ফল দেয়। সব ল্যাপটপে অবশ্য তেমনটি ঘটতে দেখা যায় না।
তবে বাজারে যে লিনাক্স উপযোগী ল্যাপটপ নেই তা নয়। Dell, Asus সহ অনেক ল্যাপটপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানই লিনাক্স উপযোগী কিছু ল্যাপটপ তৈরি করে থাকে, যদিও বাংলাদেশে আনার পর এগুলোতে উইন্ডোজ ইন্সটল দিয়ে পরে বিক্রি করা হয়।
তবে আশার কথা হল, কিছু ট্রিক খাটালে সব ল্যাপটপকেই লিনাক্স ফ্রেন্ডলি করা সম্ভব। সেরকম কিছু ট্রিকই আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
তাহলে শুরু করা যাক...
BBB (Better Battery Backup) অর্থাৎ আজকে লিনাক্সে ব্যাটারি ব্যাকআপ নিয়েই কথা বলব আপাতত। পরে সময়মত লিনাক্সে টেম্পারেচার অপটিমাইজেশন নিয়ে লিখব।
এখন, লিনাক্সে ট্রিপল B অর্থাৎ Better Battery Backup পাওয়ার জন্য যা যা করবেন:
অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ফাংশন্স ডিসেবল রাখুন
ল্যাপটপে এডভান্সড লিনাক্স ব্যবহারকারীরা powertool এর নাম নিশ্চয়ই জানেন। এর মাধ্যমে কোন কোন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কতটুকু পাওয়ার বা সহজভাবে বললে চার্জ ব্যবহার করে তা দেখা যায়। খেয়াল করলে দেখতে পারবেন যে আপনার অগোচরেই আপনার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিছু কিছু হার্ডওয়্যার অনেকখানি পাওয়ার ব্যবহার করছে। যেমন: ব্লুটুথ সাধারণত এখন লোকে ব্যবহার করে না বললেই চলে। তাই এটি বর্তমানে ল্যাপটপের জন্য মোটামুটি অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার বলা চলে। তারপরে আপনি যদি ল্যান ব্যবহার না করেন (ল্যাপটপে সাধারণত সবাই ওয়াইফাই ব্যবহার করে), তবে এটিও একটি অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ল্যাপটপের বায়োস সেটিংস থেকে সহজেই ব্লুটুথ, ল্যান, ওয়াইফাই, ইউএসবিসহ সকল অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার (যদি ব্যবহার না করেন তবে) ডিসেবল করে দিতে পারেন। ব্রাইটনেস কম রেখেও (যদি চোখে সমস্যা থাকে তবে) ল্যাপটপের ব্যাটারি সেভ করা যায়।
অপ্রয়োজনীয় স্টার্টআপ প্রোগ্রামস ডিসেবল করুন
পিসি চালু হলে কিছু প্রোগ্রামস অটোমেটিক্যালি চালু হয়ে যায়। এদের সবগুলো আপনার দরকার নাও হতে পারে। যেমন: আপনি বুটুথ, ওয়াইফাই, ইউএসবি, ল্যান ইত্যাদি হার্ডওয়্যার ব্যবহার না করলে এগুলোর সার্ভিসগুলো বন্ধ রাখতে পারেন। তাছাড়া অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারও স্টার্টআপে রান হতে পারে। সেগুলোকেও চিহ্নিত করে স্টার্টআপ থেকে ডিসেবল করে দিতে পারেন।
অপ্রয়োজনীয় সার্ভিসগুলো ডিজেবল করুন
অপ্রয়োজনীয় সার্ভিস বলতে, ধরুন আপনি এখন নেট চালাবেন না। সেক্ষেত্রে আপনি নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস, ওয়াইফাই ইত্যাদি অফ করে রাখতে পারেন। আপনি nmcli ব্যবহার করে সহজেই তা করতে পারেন। আবার আপনি যদি ওয়েব ডেভলপার হন তবে যখন কাজ করেন না তখন শুধু শুধু আপনার nginx, apache, php, mysql ইত্যাদি সার্ভিস/সার্ভার আপ রাখার কোন দরকার নেই। এগুলো অনেক পাওয়ার খায়! এখন হয়তো আপনারা ভাবতে পারেন যে বারে বারে সার্ভিসগুলো enable ডিজেবল করা ঝামেলা। এক্ষেত্রে আপনি ম্যানুয়ালি কিছু স্ক্রিপ্ট বানিয়ে ফেলতে পারেন, যার মাধ্যমে আপনার যখন প্রয়োজন তখন প্রয়োজনীয় সার্ভিসগুলো enable disable করতে পারেন। স্ক্রিপ্ট বানিয়ে ফাইলগুলো bin পাথে এক্সপোর্ট করে দিলে টার্মিনালে এগুলো ছোট কিছু কমান্ড হিসেবে কাজ করবে।
লাইটওয়েট ডিস্ট্রো ও সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
লাইটওয়েট ডিস্ট্রো, ডেস্কটপ এনভাইরনমেন্ট, ছোটখাটো সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনারা ইচ্ছে করলেই CPU Usage, Memory Usage কম করতে পারেন। লাইটওয়েট ডিস্ট্রো হিসেবে Lubuntu, Xubuntu, Linux Lite, Linux Mint, Elementary Os, Debian এদের কদর অনেক। ডিস্ট্রো হিসেবে ডেবিয়ান ব্যবহার করে দেখতে পারেন, এটি এমনিতেই চার্জ অনেক কম খায়! DE বা ডেস্কটপ এনভাইরনমেন্ট হিসেবে xubuntu-desktop, lxqt ইত্যাদি desktop environment ব্যবহার করতে পারেন।
সঠিক চার্জিং সিস্টেম অনুসরণ করুন
ল্যাপটপের জন্য সঠিক ব্যাটারি এবং চার্জার ব্যবহার করুন। নতুন ল্যাপটপ কিনার পর কমপক্ষে ৮ ঘন্টা চার্জ দিবেন অথবা ল্যাপটপের ম্যানুয়ালে লেখা সময় অনুযায়ী চার্জ দিবেন। চার্জে দিয়ে কখনই ঘুমিয়ে পড়বেন না। ১০০% চার্জ হওয়ার পরেও চার্জ করলে ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কমতে থাকে।
আপডেটেড কার্নেল ব্যবহার করুন
প্রত্যেকটি আপডেটেড কার্নেলে নতুন নতুন ফিচার এবং সুবিধা দেওয়া থাকে। আর যত আপডেটেড কার্নেল ব্যবহার করবেন, ততই ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পাবেন।
সঠিক ড্রাইভার ও ফার্মওয়্যার ব্যবহার করুন
সঠিক ড্রাইভার ও ফার্মওয়্যার এর ব্যবহার অধিক ব্যাটারি ব্যাকআপ এর পক্ষে। ইন্টেল সিস্টেমের জন্য বর্তমান ডিস্ট্রোগুলোতে আপডেটেড ড্রাইভার পূর্ব থেকেই সেটাপ করে দেয়া থাকে। এনভিডিয়া বা অন্য গ্রাফিক্স ড্রাইভার এর জন্য আলাদা ড্রাইভার রয়েছে। এগুলো নিয়মিত আপডেট দেওয়ার মাধ্যমে আপনি ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পেতে পারেন।
এই ছিল মোটামুটি লিনাক্সে ব্যাটারি সেভ করার কিছু উপায়। এটা সঠিক নয় যে লিনাক্সে ব্যাটারি সেভ করার জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো আর্টিকেল, এর বাইরেও অনেক ট্রিক্স থাকতে পারে এবং থাকাটাই স্বাভাবিক।
এখানে শুধুই একটি ধারণা তৈরি করে দেওয়া হলো। আসল কথা হলো নিজের প্রয়োজনটা বুঝা, আর কিছু না।
লিনাক্সে আপনাদের অভিজ্ঞতা আরো উন্নত হোক, এই কামনায় আজকের আর্টিকেলটি এখানেই সমাপ্ত।
Search Tags:
ল্যাপটপে লিনাক্স ব্যবহারে সর্বোচ্চ ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়ার কলাকৌশল, লিনাক্সে সর্বোচ্চ ব্যাটারি ব্যাকআপ, লিনাক্সে ব্যাটারি সমস্যা, ল্যাপটপের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়, লিনাক্সে ব্যাটারীতে চার্জ থাকে না কেন.
- ল্যাপটপ অনেক গরম হয়ে যায়।
- অনেক চার্জ খায়!!!
এরূপ হওয়ার কারণ
How To Save Your Battery On Linux
অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ফাংশন্স ডিসেবল রাখুন
ল্যাপটপে এডভান্সড লিনাক্স ব্যবহারকারীরা powertool এর নাম নিশ্চয়ই জানেন। এর মাধ্যমে কোন কোন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কতটুকু পাওয়ার বা সহজভাবে বললে চার্জ ব্যবহার করে তা দেখা যায়। খেয়াল করলে দেখতে পারবেন যে আপনার অগোচরেই আপনার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিছু কিছু হার্ডওয়্যার অনেকখানি পাওয়ার ব্যবহার করছে। যেমন: ব্লুটুথ সাধারণত এখন লোকে ব্যবহার করে না বললেই চলে। তাই এটি বর্তমানে ল্যাপটপের জন্য মোটামুটি অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার বলা চলে। তারপরে আপনি যদি ল্যান ব্যবহার না করেন (ল্যাপটপে সাধারণত সবাই ওয়াইফাই ব্যবহার করে), তবে এটিও একটি অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার। আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ল্যাপটপের বায়োস সেটিংস থেকে সহজেই ব্লুটুথ, ল্যান, ওয়াইফাই, ইউএসবিসহ সকল অপ্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার (যদি ব্যবহার না করেন তবে) ডিসেবল করে দিতে পারেন। ব্রাইটনেস কম রেখেও (যদি চোখে সমস্যা থাকে তবে) ল্যাপটপের ব্যাটারি সেভ করা যায়।
অপ্রয়োজনীয় স্টার্টআপ প্রোগ্রামস ডিসেবল করুন
পিসি চালু হলে কিছু প্রোগ্রামস অটোমেটিক্যালি চালু হয়ে যায়। এদের সবগুলো আপনার দরকার নাও হতে পারে। যেমন: আপনি বুটুথ, ওয়াইফাই, ইউএসবি, ল্যান ইত্যাদি হার্ডওয়্যার ব্যবহার না করলে এগুলোর সার্ভিসগুলো বন্ধ রাখতে পারেন। তাছাড়া অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারও স্টার্টআপে রান হতে পারে। সেগুলোকেও চিহ্নিত করে স্টার্টআপ থেকে ডিসেবল করে দিতে পারেন।
অপ্রয়োজনীয় সার্ভিসগুলো ডিজেবল করুন
অপ্রয়োজনীয় সার্ভিস বলতে, ধরুন আপনি এখন নেট চালাবেন না। সেক্ষেত্রে আপনি নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস, ওয়াইফাই ইত্যাদি অফ করে রাখতে পারেন। আপনি nmcli ব্যবহার করে সহজেই তা করতে পারেন। আবার আপনি যদি ওয়েব ডেভলপার হন তবে যখন কাজ করেন না তখন শুধু শুধু আপনার nginx, apache, php, mysql ইত্যাদি সার্ভিস/সার্ভার আপ রাখার কোন দরকার নেই। এগুলো অনেক পাওয়ার খায়! এখন হয়তো আপনারা ভাবতে পারেন যে বারে বারে সার্ভিসগুলো enable ডিজেবল করা ঝামেলা। এক্ষেত্রে আপনি ম্যানুয়ালি কিছু স্ক্রিপ্ট বানিয়ে ফেলতে পারেন, যার মাধ্যমে আপনার যখন প্রয়োজন তখন প্রয়োজনীয় সার্ভিসগুলো enable disable করতে পারেন। স্ক্রিপ্ট বানিয়ে ফাইলগুলো bin পাথে এক্সপোর্ট করে দিলে টার্মিনালে এগুলো ছোট কিছু কমান্ড হিসেবে কাজ করবে।
লাইটওয়েট ডিস্ট্রো ও সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
লাইটওয়েট ডিস্ট্রো, ডেস্কটপ এনভাইরনমেন্ট, ছোটখাটো সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনারা ইচ্ছে করলেই CPU Usage, Memory Usage কম করতে পারেন। লাইটওয়েট ডিস্ট্রো হিসেবে Lubuntu, Xubuntu, Linux Lite, Linux Mint, Elementary Os, Debian এদের কদর অনেক। ডিস্ট্রো হিসেবে ডেবিয়ান ব্যবহার করে দেখতে পারেন, এটি এমনিতেই চার্জ অনেক কম খায়! DE বা ডেস্কটপ এনভাইরনমেন্ট হিসেবে xubuntu-desktop, lxqt ইত্যাদি desktop environment ব্যবহার করতে পারেন।
সঠিক চার্জিং সিস্টেম অনুসরণ করুন
ল্যাপটপের জন্য সঠিক ব্যাটারি এবং চার্জার ব্যবহার করুন। নতুন ল্যাপটপ কিনার পর কমপক্ষে ৮ ঘন্টা চার্জ দিবেন অথবা ল্যাপটপের ম্যানুয়ালে লেখা সময় অনুযায়ী চার্জ দিবেন। চার্জে দিয়ে কখনই ঘুমিয়ে পড়বেন না। ১০০% চার্জ হওয়ার পরেও চার্জ করলে ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কমতে থাকে।
আপডেটেড কার্নেল ব্যবহার করুন
প্রত্যেকটি আপডেটেড কার্নেলে নতুন নতুন ফিচার এবং সুবিধা দেওয়া থাকে। আর যত আপডেটেড কার্নেল ব্যবহার করবেন, ততই ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পাবেন।
সঠিক ড্রাইভার ও ফার্মওয়্যার ব্যবহার করুন
সঠিক ড্রাইভার ও ফার্মওয়্যার এর ব্যবহার অধিক ব্যাটারি ব্যাকআপ এর পক্ষে। ইন্টেল সিস্টেমের জন্য বর্তমান ডিস্ট্রোগুলোতে আপডেটেড ড্রাইভার পূর্ব থেকেই সেটাপ করে দেয়া থাকে। এনভিডিয়া বা অন্য গ্রাফিক্স ড্রাইভার এর জন্য আলাদা ড্রাইভার রয়েছে। এগুলো নিয়মিত আপডেট দেওয়ার মাধ্যমে আপনি ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পেতে পারেন।
এই ছিল মোটামুটি লিনাক্সে ব্যাটারি সেভ করার কিছু উপায়। এটা সঠিক নয় যে লিনাক্সে ব্যাটারি সেভ করার জন্য এটাই সবচেয়ে ভালো আর্টিকেল, এর বাইরেও অনেক ট্রিক্স থাকতে পারে এবং থাকাটাই স্বাভাবিক।
এখানে শুধুই একটি ধারণা তৈরি করে দেওয়া হলো। আসল কথা হলো নিজের প্রয়োজনটা বুঝা, আর কিছু না।
লিনাক্সে আপনাদের অভিজ্ঞতা আরো উন্নত হোক, এই কামনায় আজকের আর্টিকেলটি এখানেই সমাপ্ত।
Search Tags:
ল্যাপটপে লিনাক্স ব্যবহারে সর্বোচ্চ ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়ার কলাকৌশল, লিনাক্সে সর্বোচ্চ ব্যাটারি ব্যাকআপ, লিনাক্সে ব্যাটারি সমস্যা, ল্যাপটপের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়, লিনাক্সে ব্যাটারীতে চার্জ থাকে না কেন.
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন