সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা উইন্ডোজ 7 ব্যবহারকারীদের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট দেওয়ার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন।
গত ১৪ এপ্রিল মাইক্রোসফট তাদের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ 7 এর জন্য সাপোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে যাতে তারা নতুন টেকনোলজির দিকে ফোকাস করতে পারে। এর ফলে উইন্ডোজ 7 ব্যবহারকারীরা এখন আর আগের মতো তাদের সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নতুন নতুন আপডেট এবং সিকিউরিটি প্যাচ পাবেন না। StatCounter এর মতে, প্রতি চারজন উইন্ডোজ ব্যবহারকারীর মধ্যে একজন উইন্ডোজ 7 ব্যবহার করেন।
![]() |
উইন্ডোজ 7 এর দিন শেষ! |
গত ১৪ এপ্রিল মাইক্রোসফট তাদের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ 7 এর জন্য সাপোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে যাতে তারা নতুন টেকনোলজির দিকে ফোকাস করতে পারে। এর ফলে উইন্ডোজ 7 ব্যবহারকারীরা এখন আর আগের মতো তাদের সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নতুন নতুন আপডেট এবং সিকিউরিটি প্যাচ পাবেন না। StatCounter এর মতে, প্রতি চারজন উইন্ডোজ ব্যবহারকারীর মধ্যে একজন উইন্ডোজ 7 ব্যবহার করেন।
এসবের মানে কি?
হ্যাকাররা অন্যের কম্পিউটার হ্যাক করার জন্য ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে। এটি ব্যবহৃত হতে পারে অন্যের তথ্য চুরি, তথ্য নষ্ট কিংবা কম্পিউটারকে এনক্রিপটেড করে দিয়ে অবৈধভাবে টাকা আদায় ইত্যাদি অসৎ কাজে। ২০১৭ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল হেল্প সার্ভিস WannaCry র্যানসমওয়্যার আক্রমণের শিকার হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে তারা এই আক্রমণটি প্রতিহত করতে পারতেন যদি তারা তাদের সিস্টেমে সর্বশেষ আপডেট ইনস্টল করতেন।
তাই বর্তমানে উইন্ডোজ এক্সপি এবং উইন্ডোজ 7 ব্যবহারকারীরা অনেক বড় সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছেন।
আপনার পুরনো উইন্ডোজ সেভেন পিসির কি করবেন?
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ 7 এর জন্য আপডেট বন্ধ করে দিলেও কম্পিউটারের উইন্ডোজ 7 চালাতে পারবেন। তবে আপনার কম্পিউটারটি হয়ে যাবে অনেক বেশি অসুরক্ষিত। মাইক্রোসফট তাদের ব্যবহারকারীদের উইন্ডোজ 10, যার মূল্য প্রায় 210 ইউরো, ব্যবহারের জন্য জোর তাগিদ দিচ্ছে।
পুরনো অনেক পিসিতেই উইন্ডোজ 10 ইনস্টল করা সম্ভব। তবে মাইক্রোসফট বলছে সেক্ষেত্রে পিসি স্লো কাজ করবে। উইন্ডোজ 10 চালানোর জন্য কমপক্ষে ১ গিগাহার্টস প্রসেসর, ১৬ জিবি হার্ডডিস্ক এবং ১ জিবি র্যাম প্রয়োজন।
তবে কোনো উইন্ডোজ 7 ব্যবহারকারী যদি তার পিসিটি অফলাইনে চালাতে চান, তবে তেমন কোন সমস্যা নেই।
ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কেমন হবে উইন্ডোজ 7?
আগেই বলা হয়েছে উইন্ডোজ 7 এখন ব্যবহার করা নিরাপদ হবে না। তবে এখনো অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে উইন্ডোজ 7 এর উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। তাই মাইক্রোসফট বলেছে তারা উইন্ডোজ 7 প্রফেশনাল এবং উইন্ডোজ 7 এন্টারপ্রাইজের জন্য অর্থের বিনিময়ে আপডেট দিবে। উইন্ডোজ 7 এন্টারপ্রাইজের জন্য মাইক্রোসফট ২০২৩ সাল পর্যন্ত আপডেট প্রদান করবে বলে জানিয়েছে।
আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কি করণীয়?
এদেশের পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা এখনো অনেকেই বিষয়টি জানেন না। অনেকে আবার টুকটাক খবর শুনে চিন্তায় পড়ে গেছেন। আসলে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এত টাকা খরচ করে উইন্ডোজ টেন-এ আপগ্রেড করা সম্ভব নয়। অনেকেই হয়তো ক্র্যাক ইউজ করে উইন্ডোজ 10 এক্টিভেট করার কথা বলবে। তবে সেটা কখনই নৈতিক এবং নিরাপদ পদ্ধতি নয়।
আপনি যদি অফলাইনে কম্পিউটার চালান এবং পেনড্রাইভ বা কোন সিডি-ডিভিডি ব্যবহার না করেন, তবে আপনি মোটামুটি সুরক্ষিত বলা যায়। তবে যদি আপনি নিয়মিতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার থাকেন, তবে আপনি অনেকটাই ঝুঁকিতে রয়েছেন বলা চলে।
তবে আশার কথা হলো, আপনি যদি উইন্ডোজ টেন এক্টিভেট করতে না চান তবুও আপনি উইন্ডোজ টেন চালাতে পারবেন।
সেটিংস থেকে ওয়ালপেপার পরিবর্তন না করতে পারা, "Windows isn’t activated. Activate Windows now" লেখা স্কিনের ওয়ালপেপারে ভেসে থাকা ইত্যাদি সমস্যায় হয়তো পড়বেন। তবে আপনি কাজে ব্যস্ত থাকলে এগুলো কোনো সমস্যাই না।
অনেকের হয়ত নতুন পিসি কেনার সামর্থ্য হবে না। সেক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার পুরোনো পিসিতে পারফর্মেন্সের পাশাপাশি সিকিউরিটিও পেতে চান, তাহলে আপনি উইন্ডোজ 7 এর পাশাপাশি লিনাক্স চালাতে পারেন। এন্টিভাইরাসের চিন্তা সারাজীবনের জন্য ভুলে থাকলেও সমস্যা নেই! 😜
দুই অপারেটিং সিস্টেম পাশাপাশি চালানো বা ডুয়াল বুটের কথা কেন বললাম, এই নিয়ে অনেক লিনাক্স ব্যবহারকারী প্রশ্ন তুলতে পারেন।
লিনাক্সে গেম খেলার মত অবস্থা এদেশের মানুষের অতটা নেই (অনেকেই Wine বা এই টাইপ জিনিস ব্যবহার করতে পারবেন না)। তাছাড়া, লিনাক্সে গেম খেলতে হলে তুলনামূলক লেটেস্ট এবং ভালো মানের সিপিইউ-জিপিইউ লাগে। তাই শুধুমাত্র গেম খেলার জন্য উইন্ডোজ 7 ব্যবহার করতে পারেন, যেটা অনেকেই করে থাকেন। আর দৈনন্দিন কাজের জন্য লিনাক্স ব্যবহার করতে পারেন। অনেকে বলেন লিনাক্সে সব টাইপের সফটওয়্যার নেই বা সব কিছু করা যায় না। দয়া করে আপনারা লিনাক্স সম্পর্কিত এই পোস্টটা দেখে আসুন।
২/১ টা ঘরোয়া মতামত দিই। আপনি যদি লিনাক্সে মাইক্রোসফট অফিসের ক্র্যাকড কপিও চালান, তাতে যদি অদৃশ্য ক্ষতিকর ম্যালওয়্যারও থাকে, তবুও আপনি উইন্ডোজের চাইতে ১০০ গুণ সুরক্ষিত থাকবেন। 😜
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন